আইএস একটি মহামারির নাম

[দশম পর্ব]

#image_title

আবু হাজার আল কুরদী

 

সিরিয়ার অন্তর্বর্তী যুদ্ধের সময় দাঈশের দ্বারা যে অপরাধগুলি সংঘটিত হয়েছে তন্মধ্যে প্রধানতম হলো— আহলুস সুন্নাহ ওয়া জামাআতের উপর নৃশংসতার পাহাড় চাপিয়ে দেয়া।

তারা ইসলামের নাম ভাঙিয়ে যে অপরাধ, হামলা ও গণহত্যা চালিয়েছে, সেগুলোকে ইসলাম কখনোই বৈধতা দেয়নি; আর না মানবতার ইতিহাসে এর কোনো অস্তিত্ব আছে!

উত্তর আলেপ্পো, যেখানে আইএসআইএসের যুদ্ধ হয়েছিল, এই অঞ্চলটি আইএসআইএসের ভয়াবহতার প্রত্যক্ষদর্শী। তারা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের বিরুদ্ধে নিজেদের অঞ্চল প্রসারিত করতে কী নিষ্ঠুর এবং অমানবিক কর্মকাণ্ডই না করেছিল!

উত্তর আলেপ্পোতে আইএস দ্বারা সংঘটিত কিছু ভয়ঙ্কর নৃশংসতা:

১. সশস্ত্র হামলা:
আইএসআইএস বারবারই বেসামরিক আবাসিক এলাকাগুলোয় সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে। উত্তর আলেপ্পো যে জায়গাকে আলেপ্পো শহরের আবাসিক ও গ্রামীণ এলাকা হিসেবে বিবেচনা করা হয়, সেই উত্তর আলেপ্পোতে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের কথা কে না জানে?

২. হয়রানি ও চরমপন্থা:
ইসলামের নামে নিরপরাধ জনগণের গণহত্যা, নির্যাতন, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহাসিক স্থান ধ্বংসের মাধ্যমে আইএস আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতসহ বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠীর ওপর অমানবিকভাবে হিংসাত্মক হামলা চালিয়েছে।

৩. অঞ্চল দখল ও ধ্বংস:
আইএসআইএস বলপ্রয়োগ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে উত্তর আলেপ্পোর বিভিন্ন এলাকা দখল করে নেয়। অনেক মানুষকে, বিশেষ করে সুন্নিদের তারা পরিবার ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করে।

৪. ভয় ও আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করা:
এলাকার জনগণকে ভয়ভীতি ও চাপে রাখার জন্য দাঈশের জন্তুরা প্রকাশ্যে হত্যাযজ্ঞ চালাতো। মানুষদেরকে প্রকাশ্যে এমন জঘন্য শাস্তি দিতো যা তাদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা ও ভীতি সৃষ্টি করতো।

আইএসআইএসের অপরাধসমূহ উত্তর আলেপ্পো এবং সিরিয়ার অন্যান্য অঞ্চলে গভীর ও নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এই নৃশংসতা মানবিক ও সামাজিক সমস্যার সঙ্কট তৈরি করেছে।

তাদের অপরাধ শুধু মানবাধিকার লঙ্ঘনই করেনি বরং ধর্মীয়, ভাষাগত, আঞ্চলিক বিভেদ ও সংঘাতও বাড়িয়ে দিয়েছে। যার কারণে মানুষ একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছে। যুদ্ধের শিখায় জ্বলতে শুরু করেছে।

Exit mobile version