রাসূলুল্লাহ ﷺ–এর রাজনৈতিক জীবনের ওপর কারা আমলরত?

#image_title

তালিবুল ইলম সিফাতুল্লাহ (সিয়াহ)

 

এটি সেই প্রশ্ন, যার উত্তর খুঁজতে উম্মাহ আজ ৭৩টি দলে বিভক্ত! মুরজিয়া, জাহমিয়া, কাদেরিয়া, খাওয়ারিজ, মুতাযিলা, রাওয়াফিয, আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআহ কিংবা অন্য কোনো দলকে যদি জিজ্ঞাসা করেন— কারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রাজনীতি অনুসরণ করে এবং মেনে চলে?

এই দলগুলোর প্রত্যেকটিই দাবি করবে যে, তারাই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রাজনীতির প্রতি সত্যিকারের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়ে এই প্রথাকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে অগ্রণী।

কিন্তু বাস্তবতা হলো আমাদেরকে প্রথমে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রাজনীতি শিখতে হবে। তারপর আমরা জানতে পারব এ যুগের ব্যক্তি বা দলগুলো প্রয়োজনীয় মানদণ্ড মেনে চলছে কি না, আর কারা রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রাজনীতির ওপর সঠিকভাবে আমল করছে।

আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নীতি ছিল এমন— তাঁর বন্ধু দাবিদার কাফের ও মুনাফিকদের তিনি হত্যা করতেন না। যদিও আল্লাহ তাআলা তাঁকে এই মুনাফিকদের প্রত্যেকের নাম বলে দিয়েছিলেন, তবে তারা দৃশ্যত সাধারণ মানুষের মধ্যে সাহাবী হিসাবে পরিচিত ছিল। এমনকি এজন্য রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের সাথে কঠোর হয়ে কথা বলা থেকেও বিরত থাকতেন।

কিন্তু বর্তমান খারিজীরা (দাঈশ) এমন লোকদের হত্যা করেছে, যারা দিনরাত “ক্বলাল্লাহু তাআলা” আর “ক্বলা রাসূলাল্লাহ” জপতেন। নিফাক হলো অন্তরের এমন একটি ব্যধি, যার সম্পর্কে আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানেন না। তবে এটা স্পষ্ট যে, দাঈশের হাতে শহীদ হযরতগণ একেকজন ছিলেন ইখলাস ও জিহাদের গুণ ও আচার-আচরণে সুশোভিত। তাঁরা সমস্ত কুফরি কথা ও কাজ থেকে ঘৃণা ও শত্রুতা পোষণকারী ছিলেন।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনই একই সাথে দুই ময়দানে ছিলেন না। তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মদীনায় হিজরত করেন তখন আহলে কিতাবদের সাথে সন্ধি করেন এবং মুশরিকদের সাথে যুদ্ধ শুরু করেন, আর যখন মুশরিকদের সাথে সন্ধি করলেন তখন আহলে কিতাবদের বহিষ্কার করলেন।

কিন্তু এযুগের খাওয়ারিজরা (দাঈশ) তাদের চরমপন্থী চিন্তাধারার দ্বারা সকল কাফেরদের দৃষ্টিতে প্রকৃত মুজাহিদের সন্ত্রাসী বানিয়ে ফেলেছিল। যদিও পর্দার আড়ালে চলছিল অন্য কিছু। তারা বিশ্বের মুসলিমদের ব্যাপকভাবে, আর বিশেষ করে মুজাহিদগণকে রাজনীতি ও সংস্কৃতি সম্পর্কে অজ্ঞ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল।

এতকিছুর পরেও, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সেই বাণী স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, “প্রত্যেক যুগে এমন একটি দল থাকবে যারা তিরস্কারকারীদের তিরস্কারের পরোয়া না করে সত্য দীন মেনে চলবে।”

যার জীবন্ত উদাহরণ ইসলামি ইমারাতের সর্বাত্মক নীতি।

Exit mobile version