দাঈশ : ইসলামের জন্য হুমকি

✍🏻 জুনাইদ যাহিদ

দাঈশ—একটি এমন গোষ্ঠী, যা মানবতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধের বিরুদ্ধে প্রস্তুতকৃত এক ভয়ংকর সন্ত্রাসী আন্দোলন। তাদের ঘৃণ্য লক্ষ্যে পৌঁছতে তারা কোনো কিছুতেই কুণ্ঠাবোধ করে না। ইতিহাসের সংক্ষিপ্ত পরিসরে আমরা দেখেছি, তাদের কাছে কোনো কিছুরই মূল্য নেই; গোপন এজেন্ডা বাস্তবায়নে কোনো কিছুই তাদের পথরোধ করতে পারে না।

ধর্মীয় পবিত্রতা ও ধার্মিক মানুষের মূল্যবোধের উপর হামলার দর্শনই এই দলের দ্রুত আন্তর্জাতিক পরিচিতির অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ধার্মিকদের সঙ্গে তাদের আচরণ ছিল অন্যান্য বিশ্বাসীদের তুলনায় অধিক কঠোর, যেন তারা ধর্মের প্রকৃত রূপ বিকৃত করে, নিধর্ম্যতা ও বিদ্বেষের দুর্গে নিজেদের স্থান করে নিতে চেয়েছিল।

দাঈশ তাদের অতি সংক্ষিপ্ত আন্দোলন ও অস্তিত্বকালের মধ্যেই ইসলামের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য ও গোপন উভয় আক্রমণ চালিয়েছে, যেন ইসলামের পবিত্র চেহারাকে কলঙ্কিত করা যায় এবং সেই সব সাহসী মানুষদেরকে বিভ্রান্ত করা যায়, যারা এই মহৎ দীনের জন্য প্রাণ বিসর্জন দিতে প্রস্তুত। সন্ত্রাস ও বিভীষিকা ছড়িয়ে দিয়ে তারা সমাজে ধর্মহীন মতাদর্শের দিকে ধাবমান একটি পথ নির্মাণ করে দেয়।

যেসব অঞ্চলে এই অন্ধকারময় অভিশপ্ত ছায়ার আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, সেসব এলাকার মানুষ সমাজ পরিচালনার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছিল। এক ক্ষুদ্র গোষ্ঠী, যাদের নিকট তেমন কোনো যোগ্যতাই ছিল না, নিজেরা জনগণের উপর কর্তৃত্ব কায়েম করে এবং এক অসংবিধিবদ্ধ, অবৈধ শক্তির দখল নেয়।

এই মতবাদ এমন এক ধারণা প্রতিষ্ঠা করে, যেন গোটা মানবজাতি কেবল দাসত্বের জন্যই সৃষ্টি—যারা তাদের বিভ্রান্তিকর বিশ্বাসকে বিনা প্রশ্নে মেনে নেবে এবং কোনো কিছুতেই আপত্তি বা অসন্তোষ প্রকাশ করবে না।

কখনো কখনো এই আধিপত্যের ধারণা এত গভীর হয়ে উঠত যে, যারা তাদের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ভিন্ন ছিল, তাদের সবাইকে ইসলামের গণ্ডির বাইরে ফেলে দিত, আর নিজেদের একমাত্র মুসলিম বলে দাবি করত।

ইসলাম ও তার মৌলিক বিশ্বাসের বিরুদ্ধে দাঈশ যে হামলা ও আগ্রাসন চালিয়েছে, তা অনেকাংশেই অমুসলিমদের মনে এই পবিত্র ও বিশুদ্ধ ধর্মের শিক্ষার প্রতি ভুল ধারণা তৈরি করেছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, হকপন্থী ও চিন্তাশীল আলেমগণ, ইসলামী চিন্তাবিদ ও মুজাহিদদের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় এই বিভ্রান্তি উন্মোচিত হয় এবং সর্বত্র তা মুছে যেতে থাকে।

যখন তারা তাদের সংগঠন ও শক্তির গতিশীল ঘোড়ার পিঠে চড়ে বসেছিল, অস্ত্রশস্ত্র ও সামরিক শক্তির অহংকারে ফেরাউনের ন্যায় নিজেদের খোদা দাবি করছিল, তখনই ইসলামী বিশ্বর বীর মুজাহিদগণ উঠে দাঁড়িয়ে তাদের এই বিকৃত মতাদর্শের অবসান ঘটান।

চিন্তাশীল মুজাহিদগণ ও বুদ্ধিবৃত্তিক ময়দানের যোদ্ধারা এতটাই সক্রিয় ছিলেন যে, আল্লাহর ইচ্ছায় দাঈশের ইসলামবিরোধী সব মতাদর্শ ও আঘাত সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় এবং সত্য উন্মোচিত হয়ে পড়ে সমগ্র বিশ্বের সামনে।

Exit mobile version