ইসলামী ব্যবস্থার সুফল | দ্বিতীয় পর্ব

✍🏻 আহমাদ রাশেদ আয-যারক্বা

ইসলামী ব্যবস্থা, যা আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক অবতীর্ণ এক পবিত্র ও ঐশী বিধান, মানুষের বানানো ব্যবস্থাগুলোর তুলনায় স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য ধারণ করে। এখানে আমরা ইসলামী ব্যবস্থার প্রধান উপকারিতাগুলো ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করব।

১ : রব্বানী ব্যবস্থা
ইসলামী ব্যবস্থার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো এটি একটি ঐশী (রব্বানী) ব্যবস্থা। এর তাৎপর্য দুটি দিককে অন্তর্ভুক্ত করে—
ক. উৎস ও মূলে ঐশী হওয়া,
খ. লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে ঐশী হওয়া।

ক. উৎসের দিক থেকে ঐশী হওয়া : ইসলামী ব্যবস্থার উৎস অন্যান্য ধর্ম বা মতবাদের মতো কোনো মানুষ, জাতি, পরিবার, গোষ্ঠী, দল বা গোত্রের কামনা-বাসনা নয়; বরং এ ব্যবস্থা আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক জিবরিল আমীন আলাইহিস সালামের মাধ্যমে নবী করীম ﷺ–এর উপর অবতীর্ণ হয়েছে। এটি মানবজাতির স্রষ্টার প্রজ্ঞা ও ইচ্ছার উপর প্রতিষ্ঠিত।
আল্লাহ তায়ালা কুরআনুল কারীমে বিভিন্ন আয়াতে এই বাস্তবতাকে বর্ণনা করেছেন, যেমন—
১. {أَفَحُكْمَ الْجَاهِلِيَّةِ يَبْغُونَ} [আল-মায়িদাহ: ৫০]
অনুবাদ : তারা কি অজ্ঞতার (ধর্মহীনতার) বিধানই কামনা করে?
২. {وَمَن لَّمْ يَحْكُم بِمَا أَنزَلَ اللَّهُ فَأُوْلَـٰئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ} [আল-মায়িদাহ: ৪৪]
অনুবাদ : যে ব্যক্তি আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার দ্বারা বিচার করে না, তারাই কাফির।
৩. {وَمَن لَّمْ يَحْكُم بِمَا أَنزَلَ اللَّهُ فَأُوْلَـٰئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَ} [আল-মায়িদাহ: ৪৭]
অনুবাদ : যে ব্যক্তি আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার দ্বারা বিচার করে না, তারাই ফাসিক।
৪. {وَمَن لَّمْ يَحْكُم بِمَا أَنزَلَ اللَّهُ فَأُوْلَـٰئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ} [আল-মায়িদাহ: ৪৫]
অনুবাদ : যে ব্যক্তি আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার দ্বারা বিচার করে না, তারাই জালিম।
এ সকল আয়াত সুস্পষ্ট প্রমাণ করে যে, ইসলামী ব্যবস্থা মানুষের বানানো আইন নয়; বরং তা আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক অবতীর্ণ বিধান।

খ. উদ্দেশ্যের দিক থেকে ঐশী হওয়া : ইসলামী ব্যবস্থা কেবল রাষ্ট্রীয় কাঠামো বা প্রশাসনিক ব্যবস্থার জন্য নয়; বরং এর উদ্দেশ্য মানবমুক্তি, ন্যায়বিচার, তাওহীদ প্রতিষ্ঠা এবং আল্লাহ তায়ালার ইবাদতের প্রসার সাধন করা। এ ব্যবস্থা মানুষের পূর্ণাঙ্গ জীবনকে পরিব্যাপ্ত করে, পার্থিব ও পারলৌকিক সাফল্যের নিশ্চয়তা দেয় এবং বিভ্রান্তি থেকে মুক্তি প্রদান করে। আল্লাহ তায়ালা কুরআনুল কারীমে ইরশাদ করেন :
«قُلْ إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ، لَا شَرِيكَ لَهُ وَبِذَٰلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا أَوَّلُ الْمُسْلِمِينَ» [আল-আনআম: ১৬২–১৬৩]
অনুবাদ : বলো! আমার নামায, আমার কুরবানি, আমার জীবন ও আমার মৃত্যু—সবই আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের জন্য; তাঁর কোনো শরীক নেই। আমাকে এ-ই (ইবাদত) এর আদেশ করা হয়েছে, আর আমি মুসলিমদের মধ্যে অগ্রগণ্য।

Exit mobile version