লজ্জাজনক পরাজয়ের পুনরাবৃত্তি!

✍🏻 হানিফ জানান

বাগরাম বিমানঘাঁটি পুনরুদ্ধারের বিষয়টি নিছক কোনো সামরিক বা কৌশলগত ইস্যু নয়; বরং এটি আফগানিস্তান, গোটা অঞ্চল এবং বৈশ্বিক রাজনীতির প্রেক্ষাপটে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, জিহাদী মূল্যবোধ, জনসমর্থন এবং ইসলামী ইমারাতের সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক পদক্ষেপের এক গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত। গত বিশ বছরে আমেরিকা আফগানিস্তানে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে, হাজারো সৈন্য হারিয়েছে এবং ইতিহাসের এক অভূতপূর্ব পরাজয়ের স্বাদ গ্রহণ করেছে। এ পরাজয় ছিল আফগানদের বীরত্ব, ইসলামী ইমারাতের মহৎ নেতৃত্ব ও যুবসমাজের আত্মত্যাগ, জিহাদের অঙ্গীকার এবং জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষার অনন্য কৌশলগত পদক্ষেপেরই ফসল।

দুই দশকের দীর্ঘ সময় জুড়ে ইসলামী ইমারাতের নেতৃবৃন্দ, তরুণসমাজ এবং সাধারণ জনগণ জিহাদের পথে নিজেদের জীবন, পরিবার এবং অর্থনৈতিক সম্পদ উৎসর্গ করেছেন। তারা দেশ, মর্যাদা ও স্বাধীনতার জন্য বহিরাগত চাপের প্রতিটি রূপের বিরুদ্ধেই প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন। ইসলামী ইমারাত দৃঢ় বিশ্বাস, সাহসিকতা ও আল্লাহর সাহায্যের নিশ্চয়তায় জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রতিটি সংকট মোকাবিলা করেছে। বাগরাম বিমানঘাঁটি পুনর্দখলের যেকোনো প্রচেষ্টা ইসলামী ইমারাতের অবস্থান, জনসমর্থন এবং জাতীয় সার্বভৌমত্বের বাস্তবতায় ব্যর্থই হবে, কেননা আজকের আফগানিস্তান স্বাধীনতা, জাতীয় মর্যাদা এবং জনসমর্থনকে পুঁজি করে বহিরাগত চাপ প্রতিহত করার সক্ষমতা অর্জন করেছে।

বাগরাম বিমানঘাঁটি, যা একসময় আমেরিকা ও ন্যাটোর কৌশলগত কার্যক্রমের কেন্দ্রস্থল ছিল, আজ ইসলামী ইমারাতের জাতীয় নিরাপত্তা ও অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমেরিকা যদি এ ঘাঁটি পুনরায় দখলের চেষ্টা করে—সেটি সরাসরি সামরিক হস্তক্ষেপ হোক, প্রতীকী চাপ প্রয়োগ হোক কিংবা আঞ্চলিক শক্তিগুলোর হস্তক্ষেপের ফলেই হোক, প্রতিটি পরিকল্পনাই ইসলামী ইমারাতের অবস্থান, জনসমর্থন এবং জাতীয় সার্বভৌমত্বের বাস্তবতায় ভেস্তে যাবে।

আফগানরা জিহাদের পথে আত্মত্যাগের মাধ্যমে বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে দিয়েছে যে, স্বাধীনতা, জাতীয় মর্যাদা এবং জনগণের কর্তৃত্ব রক্ষায় তারা বহিরাগত চাপের প্রতিটি আঘাতের জবাব দিতে সক্ষম। ইসলামী ইমারাতের নেতৃবৃন্দ ও যুবসমাজ নানা প্রতিকূলতাকে পরাভূত করে জাতীয় অবস্থানকে দৃঢ় করেছে এবং জাতীয় সার্বভৌমত্বকে এ দেশের পবিত্র মূল্যবোধের আলোয় বাস্তবায়িত করেছে।

আজ আফগানিস্তান পূর্ণ স্বাধীন। কেবল ট্রাম্প নয়, বরং পৃথিবীর কোনো পরাশক্তি পর্যন্ত ভাবতে সাহস করবে না যে তারা এ ভূমিতে পুনরায় আক্রমণ চালাতে পারবে বা এর এক টুকরো জমি দখল করতে সক্ষম হবে। এ ধরনের প্রতিটি প্রচেষ্টা আমেরিকার জন্য বয়ে আনবে কেবল বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের অপচয়, সৈন্যদের মৃত্যু এবং ইতিহাসের ভয়াবহ ও অপূরণীয় পরাজয়। আমেরিকার সেনাবাহিনী নিজেদের অতীত ভুল ও ব্যর্থতার স্মৃতি রোমন্থন করেই আবারও একই রকম লজ্জাজনক পতনের মুখোমুখি হবে। বিশ বছরের যুদ্ধকালে আমেরিকা কৌশলগত লক্ষ্য অর্জনের প্রতিটি প্রচেষ্টায় ইসলামী ইমারাতের কাছে হেরে গেছে, আর বাগরাম কিংবা আফগানিস্তানের যেকোনো অংশ পুনর্দখলের চেষ্টা ইতিহাসের পাতায় কেবল অপমান ও পরাজয়ের দলিল হিসেবেই লিপিবদ্ধ হবে।

ইসলামী ইমারাতের নেতৃবৃন্দ, যুবসমাজ এবং সাধারণ মানুষের আত্মত্যাগ প্রমাণ করেছে যে, আফগানিস্তান স্বাধীনতা, জিহাদ এবং জনসমর্থনের শক্তিতে বহিরাগত চাপের সামনে অটল। বাগরামের সম্ভাব্য দখলচেষ্টা ইসলামী ইমারাতের দৃঢ় অবস্থান, জনসমর্থন ও আঞ্চলিক প্রতিযোগিতার জটিলতার কারণে ব্যর্থ হবেই।

আফগানিস্তান আজ জাতীয় মর্যাদা, স্বাধীনতা, জিহাদ এবং আল্লাহর সাহায্যের আলোয় বিশ্বের প্রতিটি শক্তির মোকাবিলায় সক্ষম। ইসলামী ইমারাত জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সর্বাঙ্গীণ পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে, যা অভ্যন্তরীণ প্রতিরোধ, নিরাপত্তাজনিত সংকট, অর্থনৈতিক চাপ ও বহিরাগত হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধেও অটল থাকবে। ইসলামী ইমারাতের অবস্থান, শক্তিশালী জনসমর্থন, জাতীয় ঐক্য এবং জিহাদি আত্মত্যাগ বহিরাগত প্রতিটি ষড়যন্ত্রের সামনে এক মহাপ্রাচীর।

চীন, রাশিয়া, ইরান ও পাকিস্তানের মতো আঞ্চলিক শক্তিগুলোও ইসলামী ইমারাতের অবস্থানকে শ্রদ্ধা করে এবং ভালোভাবেই জানে যে আফগানিস্তানের জাতীয় সার্বভৌমত্ব বহিরাগত চাপের মুখেও দৃঢ়। বাগরাম বিমানঘাঁটি পুনর্দখলের চেষ্টা আঞ্চলিক প্রভাবনীতিতে বিঘ্ন সৃষ্টি করবে, আমেরিকার রাজনৈতিক ও কৌশলগত ক্ষতিকে বাড়িয়ে তুলবে এবং ইসলামী ইমারাতের অবস্থানকে আরও দৃঢ় করবে।

ইসলামী ইমারাতের অবস্থান জিহাদি আত্মত্যাগ, জাতীয় সার্বভৌমত্বের সুরক্ষা, জনসমর্থন, স্বাধীনতা, জাতীয় মর্যাদা, সাহসিকতা, মাতৃভূমি ও সম্মানের প্রতি প্রেম এবং আল্লাহর সাহায্যের আলোয় অটল হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাগরাম বিমানঘাঁটি পুনর্দখলের যেকোনো প্রচেষ্টা আমেরিকাকে তার অতীত ব্যর্থতার কথা স্মরণ করাবে, বিলিয়ন ডলার অপচয়, সৈন্যদের মৃত্যু এবং অপূরণীয় ঐতিহাসিক পরাজয়ের দুঃস্বপ্ন ডেকে আনবে।

আজ আফগানিস্তান পূর্ণ স্বাধীন, আর ইসলামী ইমারাত জাতীয় সার্বভৌমত্ব, অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা ও জনগণের আস্থার রক্ষায় সর্বদা প্রস্তুত। ইসলামী ইমারাতের নেতৃবৃন্দ ও যুবসমাজের আত্মত্যাগ বিশ্ববাসীর কাছে স্পষ্ট বার্তা বহন করছে: কোনো পরাশক্তি যেন এ ভূমির সার্বভৌমত্বের দিকে কুদৃষ্টি না দেয়। বাগরাম বিমানঘাঁটির সম্ভাব্য দখলচেষ্টা শুধু আমেরিকার নীতির ব্যর্থতাকেই প্রমাণ করবে না, বরং ইসলামী ইমারাতের অবস্থানকে শক্তিশালী করবে, জাতীয় সার্বভৌমত্বকে সুরক্ষিত রাখবে এবং আফগানিস্তানের বৈশ্বিক মর্যাদা আরও উঁচু করবে।

অবশেষে, বাগরাম বিমানঘাঁটির প্রশ্নটি আফগানিস্তানের জাতীয় সার্বভৌমত্ব, জিহাদের আত্মত্যাগ, জনসমর্থন, স্বাধীনতার সুরক্ষা এবং আল্লাহর সাহায্যের কেন্দ্রবিন্দু। ইসলামী ইমারাত জাতীয় সার্বভৌমত্ব, অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা, জিহাদি আত্মত্যাগ এবং জনসমর্থনের শক্তিতে বহিরাগত প্রতিটি চাপের মোকাবিলায় সম্পূর্ণ প্রস্তুত। আফগানরা সাহসিকতা, মাতৃভূমি ও মর্যাদার প্রতি প্রেম এবং আল্লাহর সাহায্যের আলোয় নিজেদের অবস্থান প্রমাণ করেছে। বিশ বছরের ব্যর্থতার পর আমেরিকার উচিত নয় বাগরাম কিংবা আফগানিস্তানের কোনো অংশ পুনর্দখলের চেষ্টা করা, কেননা তা শুধু বিলিয়ন ডলার অপচয়, সৈন্যদের মৃত্যু এবং এক নতুন অপূরণীয় ঐতিহাসিক পরাজয় ছাড়া আর কিছুই বয়ে আনবে না।

আজ আফগানিস্তান সম্পূর্ণ স্বাধীন, আর বিশ্বের কোনো শক্তিই যেন কল্পনাও না করে যে এ দেশের জাতীয় সার্বভৌমত্ব ভেঙে দেওয়া সম্ভব। আজ বিশ্ব নিশ্চিতভাবে জানে, স্পষ্টভাবে উপলব্ধি করেছে—আফগানিস্তান সাম্রাজ্যসমূহের কবরস্থান।

Exit mobile version