কোনো জাতিগোষ্ঠী শুধু স্লোগান, আশা এবং স্বপ্নের ওপর টিকে থাকে না; বরং টিকে থাকে তাদের ব্যক্তিদের কাজ, চরিত্র এবং সিদ্ধান্তের ওপর। আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপ, প্রতিটি চিন্তা এবং প্রতিটি সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র ব্যক্তিগত বা একক প্রভাব রাখে না, বরং সমগ্র উম্মাহর ভবিষ্যতের সাথে যুক্ত। যদি আমি এবং আপনি অলসতা করি, তবে আগামী প্রজন্মকে সেই অবহেলার মূল্য দিতে হবে।
আজকের যুগে, মুসলিম উম্মাহ আদর্শিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং নৈতিক পরীক্ষার সম্মুখীন। এই পতন কেবল বাইরে থেকে আসেনি, বরং এটি আমাদের নিজস্ব ত্রুটি, অবহেলা এবং দায়িত্বহীনতার ফল। অনেক তরুণ বলে, “আমি কে? আমার দ্বারা কী আসে যায়?” আর এই ধরনের চিন্তাই জাতিগুলোকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়। এমন জ্ঞানহীন, উদ্দেশ্যহীন এবং চিন্তাহীন প্রজন্মই পতনের সূচনা করে।
এর বিপরীতে যদি একজন তরুণও নিজের ওপর কাজ করে, তার চিন্তাকে আলোকিত করে এবং সত্যের জন্য দাঁড়ায়, তবে সে এক বিশাল পরিবর্তনের ভিত্তি স্থাপন করতে পারে। এই কারণেই বলা হয়েছে, “যদি একজন মানুষ শুধরে যায়, তবে একটি ঘর শুধরে যায়, আর যদি একটি ঘর শুধরে যায়, তবে পুরো জাতি পরিবর্তিত হয়।”
যদি আমাদের পদক্ষেপগুলো জ্ঞান, তাকওয়া (খোদাভীতি), সত্যবাদিতা এবং ইখলাসের (আন্তরিকতা) পথে থাকে, তবে উম্মাহ তার হারানো সম্মান ফিরে পেতে পারে। অন্যথায়, এই অবহেলাই আমাদের ইতিহাসকে ধ্বংস করে দেবে। ইসলামের ইতিহাস উজ্জ্বল হয়েছে হযরত হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু, সালাহুদ্দিন আইয়ুবী রহিমাহুল্লাহ এবং মুহাম্মাদ বিন কাসিম রহিমাহুল্লাহর মতো জাগ্রত, ঈমানদার এবং দায়িত্বশীল যুবকদের দ্বারাই।
আসুন, এই সত্যটি বুঝি যে, “আমার পদক্ষেপ শুধু আমার নয়, এটি একটি উম্মাহর ভাগ্য গড়ে তোলে।” যদি আজ আমরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিই, তবে আগামীকাল উম্মাহর বিজয় হবে। আর যদি আজ আমরা অবহেলা করি, তবে এই উম্মাহকেই কাল চূড়ান্ত পতনের মুখোমুখি হতে হবে।
অতএব, এখন সিদ্ধান্ত নাও! সময় কারো জন্য অপেক্ষা করে না, এবং ইতিহাস সবসময় তাদেরই মনে রাখে যারা কেবল কথা নয়, কাজ করেছে। যদি আজ তুমি একটি ছোট পদক্ষেপও নাও, তবে তা পরিবর্তনের সূচনা হতে পারে। কিন্তু যদি নীরব থাকো, তবে কাল তুমিও সেইসব মানুষের মধ্যে গণ্য হবে যারা শুধু দেখেছে, কিন্তু কিছু করেনি।
ওঠো, কাজ করো; কারণ উম্মাহর ভবিষ্যৎ তোমার সিদ্ধান্ত এবং সংকল্পের ওপর নির্ভরশীল।





















