আবু হাজার আল কুরদী
আমরা যদি আইএসআইএসের অপরাধ সম্পর্কে বিস্তারিত বই লিখতে চাই, তবে সেই বইয়ের সংখ্যা কয়েক ডজন ভলিউমে পৌঁছাতে পারে। কারণ, তাদের এই শয়তানীবাহিনী এবং কুখ্যাত গোষ্ঠীর অনুসারীরা এতো বিশ্বাসঘাতকতা করেছে যার কোন ইয়ত্তা নেই। এই নির্দয় সম্প্রদায়ের মন্দতা এতোই বিস্তৃত যে, কোথা থেকে শুরু এবং কোথায় গিয়ে শেষ হয়, তা বলা মুশকিল।
বিশ্বের প্রতিটি কোণে যেখানেই মুসলিমরা বাস করে, সেখানে এই বিশ্বাসঘাতকদের অপরাধের কুফল দেখা যায়। এরা ইরাক থেকে নিয়ে ভারত উপমহাদেশ সহ বহু দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। পৃথিবীর আনাচে-কানাচেতে যেখানেই তাদের নাম-চিহ্ন ছিল, সেখানে বাজে স্মৃতি, বিভীষিকা ও নৃশংসতা ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। যদিও এই ব্যক্তিদের সম্পর্কে সম্পূর্ণ বিষয়াবলী এবং ব্যাপকভাবে লেখা কঠিন, কিন্তু একজন মুসলিম এবং একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি হিসাবে আমি তাদের সম্পর্কে কয়েকটি কথা লিখতে বাধ্য হয়েছি।
কীভাবে আইএসআইএসের উত্থান হলো?
দাঈশ তার আবির্ভাবের পর থেকে বিশ্বের সামনে দু’টি ভিন্ন মুখ দেখিয়েছে, তবে দাঈশের আবির্ভাবের শুরুতে তাদের মধ্যে এতোটা বিচ্যুতি ছিল না। আমি যা লিখতে চাই, তা হলো এই বিশ্বাসঘাতক ও নির্দয় দলের ২০১৪ সালের পরবর্তী চেহারা ও ঘটনাপ্রবাহ। আমরা দাঈশের চরম অবাধ্যতা এবং বিশ্বাসঘাতকতার প্রাথমিক বছরগুলিতে ফিরে যাওয়ার আগে, কীভাবে আইএসআইএসের উদ্ভব হয়েছিল সে সম্পর্কে সংক্ষেপে কয়েকটি পয়েন্ট উল্লেখ করবো।
ইরাকের আল কায়দার নেতা শায়খ আবু মুসআব আল জারকাভির নেতৃত্বে ‘জামাআতু তাওহীদ ওয়াল জিহাদ’ নামে একটি সংগঠন ২০০৩ সালে ইরাক আক্রমণের সময় ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সংঘঠিত হয়। এই দলটি বিভিন্ন পর্যায়ে বিস্তৃত হয় এবং ইরাকের অনেক শহরে সামরিক তৎপরতা শুরু করে।
২০০৬ সালে শায়খ আবু মুসআব জারকাভি ইরাকের সমস্ত সুন্নি সশস্ত্র গোষ্ঠীকে একত্রিত করার জন্য মুজাহিদীনদের শুরা প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। মার্কিন বাহিনীর হাতে শায়খ জারকাভি রহ. শহীদ হওয়ার পর আবু উমার আল বাগদাদি এই গ্রুপের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। তিনিও ২০১০ সালে আমেরিকান বাহিনীর হাতে শহীদ হন এবং আবু উমার আল বাগদাদি এবং আবু হামজা মুহাজির শহীদ হওয়ার পর আবু বকর আল বাগদাদি আইএসআইএসের লিডার হয়ে যায়।
চলবে….