আফগানিস্তান দখলের পর আমেরিকা ও তার মিত্ররা ভেবেছিল যে, শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে তারা আফগান জনগণের ইচ্ছাশক্তিকে দমন করে তাদের অন্যায় শর্তগুলো মেনে নিতে বাধ্য করতে সক্ষম হবে।
কিন্তু যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ার পাশাপাশি অমুসলিম বিশ্বের শক্তিগুলো চরম ক্ষতির মুখে পতিত হওয়ার পর এই ধারণা সম্পূর্ণভাবে ভুল প্রমাণিত হয়। এর ফলে তাদের স্থানীয় ভাড়াটে বাহিনী ইসলামি ইমারাতের প্রকৃত মুজাহিদদের মোকাবিলায় অক্ষম হয়ে পড়ে।
এই ব্যর্থতার পর আমেরিকা দ্বিতীয় কৌশল গ্রহণ করে। তারা খাওয়ারিজ নামে পরিচিত একটি ভাড়াটে গোষ্ঠীকে সক্রিয় করে এবং ইসলামি ইমারাতের মুজাহিদদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়। এর অংশ হিসেবে আফগানিস্তানে খাওয়ারিজদের শাখা আইএসকেপি সক্রিয় করা হয়। তাদের ধারণা ছিল, এই ভাড়াটেরা ইসলামি ইমারাতের অগ্রগতি ব্যাহত করতে পারবে।
ইসলামি ইমারাত যখন খাওয়ারিজ ফিতনা নির্মূলে সক্রিয় হয়, তখন আমেরিকা দাবি করেছিল যে তারা আইএস খোরাসানের বিরুদ্ধেও যুদ্ধ করছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় আমেরিকার বিমান বাহিনী ইসলামি ইমারাতের মুজাহিদদের অবস্থানগুলোতে হামলা চালানোর মাধ্যমে খারিজিদেরকে সরাসরি সহযোগিতা করে। খারিজি গোষ্ঠীকে নির্মূল করার বদলে আমেরিকা তাদের শক্তি বৃদ্ধির সুযোগ করে দেয়, যা তাদের প্রকৃত অভিসন্ধি প্রকাশ করে।
এমনকি আমেরিকা একাধিকবার সরাসরি এই প্রক্সি বাহিনীর পক্ষে অবস্থান নেয়। উদাহরণস্বরূপ ২০১৯ সালের ১৩ জানুয়ারি আমেরিকান সৈন্যরা তাদের স্থানীয় সহযোগীদের সঙ্গে মিলে বাদঘিস প্রদেশের জওয়ান্দ জেলায় ইসলামি ইমারাতের একটি কারাগারে হামলা চালায় এবং ৪০ জন খারিজিকে মুক্ত করে।
এ ঘটনাই শুধু আমেরিকা ও খারিজিদের মধ্যে প্রত্যক্ষ সহযোগিতার একমাত্র দৃষ্টান্ত ছিল না। ২০১৯ সালের ৬ জুন, আমেরিকান বাহিনী ফারিয়াব প্রদেশে ইসলামি ইমারাতের কারাগারে অভিযান চালিয়ে ১০ জন আইএস বন্দিকে মুক্ত করে।
ইসলামি ইমারাত যখন কুনার প্রদেশে খারিজি ফিতনা দমন করতে ব্যাপক অভিযান শুরু করে এবং ধীরে ধীরে আইএস খোরাসানের যোদ্ধাদের অবরুদ্ধ করে ফেলে, তখন এ গোষ্ঠীর গুরুত্বপূর্ণ সদস্যরা নুর গুল জেলার কারচান্দ ও মাজার দারা এলাকায় পালিয়ে যায়।
কিন্তু যখন স্পষ্ট হয়ে গেল যে, ইসলামি ইমারাতের বীর যোদ্ধারা তাদের আটক করতে চলেছে এবং তাদের পলায়নের আর কোনো পথ খোলা নেই, তখন গভীর রাতে অসংখ্য আমেরিকান বিমান সেখানে উপস্থিত হয়। এই বিমানগুলো খারিজিদের তাদের অস্ত্রসহ উদ্ধার করে একটি অজ্ঞাত স্থানে সরিয়ে নিয়ে যায়।
আমেরিকার বস্তুগত ও নৈতিক সমর্থন সত্ত্বেও আইএস খারিজিরা ইসলামী ইমারাতের মুজাহিদদের সামনে টিকতে তো পারেই নি উল্টো দ্রুত পরাজিত হয়েছিল। আফগানিস্তান বিজয়ের পর কাফের রাষ্ট্রগুলো, বিশেষত আমেরিকা প্রচারণার মাধ্যমে খারিজিদের হুমকিকে অতিরঞ্জিত করে ভয় ছড়ানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তাদের ফিতনার অগ্নিশিখা দ্রুত নিভে যায়, আর এই পবিত্র ভূমির মুসলমানরা তাদের অনিষ্ট থেকে চিরতরে মুক্তি লাভ করে।