আফগানিস্তান বিশ্বের জন্য হুমকি নাকি খোদ আফগানিস্তানই হুমকির মুখে?

#image_title

নু’মান হরভী

 

আফগানিস্তান কোনো গোষ্ঠীকে অন্যদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে না। দাঈশের বিরুদ্ধে সংগ্রাম আফগানিস্তানের সরকার ও জনগণ তাদের আকিদার জায়গা থেকে করে থাকে, কারণ দাঈশ একটি তাকফিরি দল। দীর্ঘকাল যাবত পৃথিবীতে তারা বিপর্যয় ও ফিতনা-ফাসাদ সৃষ্টি করে আসছে। তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা প্রত্যেক মুসলিমের কর্তব্য। আফগানিস্তানে দাঈশের উত্থানের সাথে সাথে তারা ফিতনা-ফাসাদ ছড়িয়ে আসছে। ক্ষমতা লাভের আগে ও পরে তাদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান ইমারাতে ইসলামিয়ার, আর এই সংগ্রামের কথা ইমারাত কারো কাছ থেকে গোপন করেনি কখনো। তদুপরি মক্কা বিজয়ের পর মদীনায় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের গৃহীত যে নীতি—এই বরকতময় নীতি অনুসারে ইসলামি ইমারাত তার অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক নিয়ম-কানুন সাজিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে একটি সংস্থা বারবার আফগানিস্তানকে হুমকি প্রমাণিত করার জন্য নতুন যোদ্ধাদের আগমন নিয়ে আলোচনা করছে। কিন্তু এসবের কি কোনো সত্যতা আছে? আর তা যদি সত্য না হয়, তাহলে এমন কথা বলা হচ্ছেই বা কেন?

উত্তর সুস্পষ্ট। এসব বক্তব্যের কোনো সত্যতা নেই, কারণ বিগত তিন বছরে সেই সংগঠনেরই সদস্য দেশগুলো থেকে কয়েক ডজন দাঈশ যোদ্ধা আফগানিস্তানে এসেছে এবং আফগানিস্তানে কয়েক ডজন হামলা চালিয়েছে। তাদের অনেককে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে গ্রেফতার করা হয়েছে, অনেককে নিহত করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত এমন কোনো ঘটনা সামনে আসেনি যে, কোনো যোদ্ধা আফগানিস্তান থেকে গিয়ে ওই সংগঠনের কোনো সদস্য দেশে হামলা করেছে। ইরানের কিরমান এবং রাশিয়ার মস্কোতে যে হামলা হয়েছিল, সেখানের হামলাকারীরা কোন দেশের? কোথা থেকে সংগঠিত হয়েছিল হামলা?

বিশ্লেষকদের মতে কিছু দেশের কিছু প্রতিষ্ঠান তথ্যের ক্ষেত্রে গুজবের রাজ্যে বাস করে অথবা আফগানিস্তানের কিছু প্রতিবেশী দেশে নিজেদের প্রভাব ও উপস্থিতির ন্যায্যতার জন্যই এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে থাকে। একইভাবে, আফগানিস্তানের আশেপাশে এমন কিছু গোয়েন্দা সংস্থা রয়েছে যাদের মিথ্যা তথ্য জালিয়াতিতে দুর্দান্ত দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং এটি তাদের ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। আফগানিস্তানের পরিস্থিতি সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া এই অঞ্চল ও বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলির জন্য গুরুত্বপূর্ণ, পাশাপাশি পক্ষপাতি হিংসুক চক্রগুলোর আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে বানোয়াট পলিসি কিংবা মিথ্যা তথ্য দ্বারা প্রভাবিত না হওয়া। যদি চক্রগুলো এভাবে মিথ্যা ছড়াতেই থাকে, তাহলে তারা বড় ভুল করছে, ধরে নিতে হবে এটি ইচ্ছাকৃত। হতে পারে প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তিগুলি তাদের পিছনে রয়েছে। তাদের কঠোর নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হবে।

Exit mobile version